পৃষ্ঠাসমূহ

মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৫

চকরিয়ায় কালভার্ট নির্মাণ কাজে বাঁধার জের, কাউন্সিলর ও আওয়ামীলীগ নেতার দুই পরিবারের মধ্যে সংর্ঘষ, আহত ২০

চকরিয়ায় কালর্ভাট নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়ার জের ধরে পৌর কাউন্সিলর ও আওয়ামীলীগ নেতার পরিবার এবং সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ওইসময় দুই পক্ষেরমধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে মহিলাসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক।



গতকাল সোমবার বিকেলে পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাজারপাড়া এলাকায় কাউন্সিলর নুর হোসেনও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন গংয়ের মধ্যে ঘটেছে এ সংঘর্ষের ঘটনা।উপজেলা হাসপাতালের জরুরী বিভাগ সুত্র জানায়, সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের আহতরা হলেন পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেম্বার আমির হোসেন (৫৫), তার ছেলে চকরিয়া পৌরসভার বাতি পরিদর্শক রাজিবুল মোস্তাফা (৩৫), কুতুবদিয়া কলেজের প্রভাষক সায়েম রেজা মনির (২৬), মোহাম্মদ হানিফ(২১) ভাতিজা সেলিম উদ্দিন (৩৮), তার শিশু ছেলে ফয়সাল উদ্দিন বাবু (৭), রাজা মিয়া (২৫), মো.রাসেল (৩০), নুরুল কবির(৩৮), শহিদুল ইসলাম(১৮), জাফর আলম (৪৪), নুরুল কবির(১৭), জনুয়ারা বেগম (৪০), রাশেদা আক্তার(৩০), সেতারা বেগম(২৫), সোনিয়া (৭), সাইদুল ইসলাম(১৬), চুন্নি আক্তার (১০)। আহতদের চকরিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । আহতদের মধ্যে দুটি দাঁত ভেঙে যাওয়া রাজিব ও চোখে আঘাত প্রাপ্ত মনিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।
স্থানীয় লোকজন জানায়, পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাজারপাড়া সড়কের পাশে কিছুদিন আগে সেতু লাগোয়া ক্রয়কৃত জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করতে যান কাউন্সিলর নুর হোসেন । ওইসময় স্থানীয় লোকজন পানি চলাচলের পথ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন । এরই প্রেক্ষিতে সোমবার সকালে ইউএনও মো. সাহেদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পানি চলাচল পথ রাখার জন্য কাউন্সিলরকে নির্দেশ দেন । স্থানীয় লোকজন জানান, এদিন বিকেলে কাউন্সিলর নুর হোসেনের লোকজন পানি চলাচলের পথ জায়গা রেখে ফের কালভার্ট নির্মাণ কাজ করছিলেন ।
ওইসময় পৌরসভার বাতি পরিদর্শক রাজিবুল মোস্তাফা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পৌরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্দেশে কালর্ভাট নির্মাণ কাজটি বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সুত্রপাত ঘটে । পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার জমির মাথাখিলা জায়গায় আমি সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরাও করেছি । এতে আমির হোসেন মেম্বার ক্ষেপে যায় । সোমবার ইউএনও স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যাওয়ার পর আমির হোসেনের ছেলে রাজিব কালর্ভাট নির্মাণ কাজে বাঁধা দিলে ঘটনার সুত্রপাত হয় । চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু বলেন, কাউন্সিলর নুর হোসেনের ভাই যুবদল নেতা জয়নাল চলাচল পথ ও কালভার্ট দখল করেছে। ওই কাজটির বিপক্ষে ছিলেন এলাকার লোকজন। মুলত ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন এই কাজে বাঁধা দেওয়ায় তাঁদের ওপর হামলা করেছে । চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জহিরুল ইসলাম খান বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি । হাসপাতালে চিকিৎসারত আহতদের দেখেছি। দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, সংঘর্ষের এ ঘটনায় থানায় কোন পক্ষই অভিযোগ দেয়নি । অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।এদিকে সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় পৌরসভার বাতি পরিদর্শক রাজিবুল মোস্তাফা গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পৌরসভার কর্মকর্তা- কর্মচারী পরিষদ। এক বিবৃতিতে পৌরসভার সচিব মাস- উদ মোরশেদ, পৌরসভার কর্মকর্তা- কর্মচারী পরিষদের সভাপতি বশির আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আবু রাশেদ মোহাম্মদ জাহেদ উদ্দিন সহ পৌরসভার সকল কর্মকর্তা- কর্মচারী ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। অন্যথায় পৌরসভার কর্মকর্তা- কর্মচারী পরিষদের উদ্যোগে কঠোর কর্মসুচী পালনের ঘোষনা দেন নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন