পৃষ্ঠাসমূহ

রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৫

লোকালয়ে ঢুকে কৃষকের সবজি ক্ষেত ধ্বংস করল বন্যহাতি


কক্সবাজারের চকরিয়ায় রাতের আঁধারে পথ ভুলে গিয়ে একটি বাচ্চাসহ দুটি বন্যহাতি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। এসময় দিকবিদিক ছুটাছুটি করতে গিয়ে গুড়িয়ে নষ্ট করে দিয়েছে এলাকার অন্তত ৮কৃষকের লক্ষাধিক টাকার সবজি ক্ষেত। গতকাল শনিবার ভোররাতে উপজেলার পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়নের দক্ষিন সিকদারপাড়া মুন্সিরবিল এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা। সকালে দিনের আলো ফুটে উঠলে হাতি দুটি দেখতে বিলের আনা-কানাছে ভিড় লেগে যায় উৎসক নারী-পুরুষের। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁেছ উৎসুক জনতাকে বারবার নিবারুন করেন। পরে বিকেলের দিকে বনকর্মীরা ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে বিল থেকে হাতি দুটি সরিয়ে নিতে সক্ষম হন। তবে প্রথমবারের মতো গ্রামীণ লোকালয়ে বন্যহাতি ঢুকে পড়ার কারনে ওই এলাকার লোকজনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
উপজেলার পুর্ববড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিল বলেন, শনিবার ভোরে দক্ষিন সিকদারপাড়া মুন্সিরবিলের জমিতে ফুলকপি উত্তোলন করতে যায় কয়েকজন কৃষক। ওইসময় তাঁরা দেখতে পান একটু পশ্চিম দিক থেকে দুটি হাতি ক্ষেতের দিকে আসছে। ওইসময় তাঁরা পালিয়ে গিয়ে ঘটনাটি স্থানীয় লোকজনকে অবহিত করেন। ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, এরপর তিনি ঘটনাটি তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলামের নির্দেশে ফাসিয়াখালী রেঞ্জের বনকর্মী ও মাতামুহুরী পুলিশ ফাড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। বিকেল আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে ঘটনাস্থল থেকে বন্যহাতি দুটি সরিয়ে নিতে সক্ষম হন বনকর্মীরা।
স্থানীয় কৃষক খোরশেদ আলম জানান, হাতি দুটি রাতভর তার টমেটো ক্ষেতের উপর হাটাহাটি করে। ফলে ক্ষেতের বেশির ভাগ ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। এতে তার অন্তত ২০হাজার টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে। তার মতো একই সময়ে এলাকার কৃষক রশিদ আহমদ, রুহুল কাদের, আমির হোসেন, এনাম মিয়াসহ আরো ৭-৮জন কৃষকের টমোটো, মরিচ, ফুলকপি ও ধান ক্ষেতের ফসল গুড়িয়ে দিয়েছে বন্যহাতি দুটি। এতে এলাকার এসব কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারনা করছেন কৃষক খোরশেদ আলম।
জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়ার ফাসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা এবিএম জসীম উদ্দিন বলেন, লোকালয়ে বন্যহাতি ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক সেখানে রিংভং বনবিট কর্মকর্তা শাহআলমের নেতৃত্বে বনকর্মীদের পাঠানো হয়। পরে বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে লোকালয়ের ক্ষেত থেকে হাতি দুটি নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ফাসিয়াখালী রেঞ্জের রিংভং বনবিট কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, বনাঞ্চলে প্রতিনিয়ত বৃক্ষনিধন ও জনবসতি গড়ে উঠার কারনে বর্তমানে হাতির আবাসস্থল বিলুপ্ত হচ্ছে। একই সাথে খাদ্য সংকটও দেখা দিয়েছে। এ অবস্থার কারনে মুলত বন্যহাতির পাল লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। তিনি বলেন, ঘটনাটি জানার পর শনিবার সকালে প্রথমে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জনগনের সহায়তায় হাতি দুটি সরিয়ে নিতে চেষ্টা করি। কিন্তু দীর্ঘ ৮ঘন্টা ধরে হাতি দুটি ফসলের ক্ষেতের উপর দাঁিড়য়ে থাকে। এরপর বিকেলে আমরা পরপর ৪রাউন্ড ফাঁকা গুলি করতে করতে অবশেষে হাতি দুটিকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে সক্ষম হই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন